৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বিকাল ৩:২২
শিরোনামঃ

বরিশালে ৯ বছর ধরে বন্ধ সিটি বাস সার্ভিস চালুর দাবি

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ বুধবার, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২,
  • 207 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

 

বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দুটি পরিষদ দায়িত্ব পালন করলেও নিরাপদ ও কম খরচে যাতায়াতের মাধ্যম বরিশাল সিটি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত থ্রি-হুইলার যানবাহনের দখলে চলে গেছে পুরো নগর।

ব্যাটারিচালিক রিকশা আর অটোরিকশার কারণে তীব্র যানজটের সঙ্গে বাড়তি ভাড়া গুনে গুনে হয়রান নগরবাসী। ফের সিটি সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।

বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ থেকে রুপাতলী পর্যন্ত ২০০৩ সালে বিআরটিসি দ্বিতল বাস সার্ভিস চালু হয়েছিল। যাত্রী থাকা সত্ত্বেও দুই বছর চলার পর অজানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৯ সালে তৎকালীন মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণের হাত ধরে সিটি বাস সার্ভিস চালু হয়। নগরের রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর, নদী বন্দর থেকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এবং সেখান থেকে রুপাতলী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত বিভিন্ন সড়ক ধরে বাসগুলো চলাচল করতো। তবে অজানা কারণে সেই সার্ভিসও ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর ধীরে ধীরে গোটা নগর ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হলুদ অটোরিকশায় ভরে যায়। যদিও বরিশাল নগরে এক সময় আড়াই হাজারের বেশি হলুদ অটোরিকশার লাইসেন্স দিয়েছিল সিটি করপোরেশন। তবে কয়েক বছর পরে সরকারি নির্দেশনার কারণে বন্ধ রাখা হয় নতুন লাইসেন্স দেওয়া ও পুরাতন লাইসেন্সের নবায়ন। সেই সুযোগে বরিশালের রাস্তা দখল করে নেয় কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হলুদ অটোরিকশা।

এখন অবধি এসব যানবাহন লাইসেন্স না পেলেও বিনাকাগজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বরিশাল নগরের অলিগলি। দিনে দিনে এর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে বেঁধে যাচ্ছে তীব্র যানজট।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নগরবাসী বলছেন, সিটি সার্ভিস থাকলে অন্য পরিবহনের ভাড়া কমে যায়। যেখানে এখন গ্যাস ও ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুইলার জাতীয় যানবাহনে নদী বন্দর থেকে রুপাতলী পর্যন্ত মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ যেতে গুনতে হয় ১৫-২০ টাকা। একইভাবে রুপাতলী থেকে নথুল্লাবাদ ও বিবির পুকুর পাড় এবং বিবির পুকুর পাড় থেকে আবার নথুল্লাবাদ ও চৌমাথায় যেতেও গুনতে হয় একই রকমের ভাড়া। যে ভাড়া নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সাথে বাকবিতণ্ডা হচ্ছে যাত্রীদের। এমনকি মারামারির ঘটনাও ঘটছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, আগে থ্রি হুইলারগুলোতে কম দূরত্বের যাত্রীদের তোলা হতো না। এখন বরিশালে এত পরিবহন হয়েছে যে, সব দুরত্বের যাত্রীদের যেমন তুলছে। ভাড়াও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে আদায় করছে।

তিনি বলেন, এই শহরের রাস্তা অনুপাতে থ্রি-হুইলারের সংখ্যা অনেক বেশি। যেমন বরিশাল শহরের মতো কোনো সিটি শহরে এত বেশি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা কোথাও নেই। তার ওপর সিএনজি চালিত থ্রি-হুইলার ও প্যাডেল চালিত রিকশা তো রয়েছেই। কয়েকমাস আগে অটোরিকশার লাইসেন্স দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর শহরে এর সংখ্যা আরও বেড়েছে। লাইসেন্সবিহীন গাড়িতে গোটা নগর ভরে গেছে। ফলে নগরের বিভিন্ন জায়গায় যানজট লেগেই থাকছে। শহরের চাহিদা অনুযায়ী যানবাহন রেখে বাকিগুলো অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া উচিত। সেইসাথে রাস্তার প্রশস্ততা হিসেব করে সিটি সার্ভিসের বাসের বদলে মিনিবাস সংযুক্ত করা উচিত। আর সিটি বাস থাকলে সাধারণ মানুষের ওপর থেকে বাড়তি ভাড়ার চাপ কমবে।

বাস চালুর বিষয়ে কোন উদ্যোগের কথা না জানাতেও পারলেও বিসিসির যানবাহন ও লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল নগরে যাতে বৈধভাবে অটোরিকশা চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হবে।

গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলার আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, নাগরিকদের কথা চিন্তা করে সিটি সার্ভিসের দাবি ইতোমধ্যে আমরা উত্থাপন করেছি। অটোরিকশা, সিএনজি, মাহেন্দ্রা যাই বলা হোক না কেন, বরিশাল শহরে ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নৈরাজ্য চলছে। যার প্রভাব পড়ছে যাত্রীদের ওপর। সিটি সার্ভিস চালু হলে যাত্রা যেমন নিরাপদ হবে, তেমনি ভাড়া নিয়ে ছোট পরিবহনগুলোর নৈরাজ্যও বন্ধ হবে।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo