আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসগুলো মহাসড়কের ওপর রেখেই করছে যাত্রী ওঠানামা। দিনে ও রাতের বাসচালক, সহকারী ও সুপারভাইজাররা নির্ধারিত স্থান ছাড়াই ইচ্ছেমতো মহাসড়কের যত্রতত্র যাত্রী তোলেন ও নামান। ফলে যানজট সৃষ্টিসহ ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা।
সরেজমিন সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশ ১০৬ কিলোমিটার এলাকায় এমন চিত্রই দেখা যায়।
জানা যায়, মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা, নিমসার, ক্যান্টনমেন্ট, আলেখারচর, জাগুরজুলি, পদুয়ার বাজার, সুয়াগাজী, চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকির মধ্যে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
তা ছাড়া মহাসড়কের পাশে অনেক জায়গায় বাস দাঁড় করিয়ে অস্থায়ী স্ট্যান্ড তৈরি করছেন যাত্রীবাহী বাসচালকরা। বাসগুলো দীর্ঘক্ষণ থামিয়ে রেখে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে। ফলে দ্রুতগতির গাড়িগুলো চলাচল করতে পারছে না। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
ইলিয়টগঞ্জ থেকে কুমিল্লা আসা যাত্রী রফিুকল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কুমিল্লায় আসি। বাসচালকের সহকারী আমাদের আলেখারচরে মহাসড়কের মাঝখানে নামিয়ে দেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিভাজক ডিঙিয়ে রাস্তা পারাপার আমাদের জন্য ঝুঁকি ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।’
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর কবির জানান, পদুয়ার বাজারে মহাসড়কের দুপাশে যাত্রীবাহী বাস ঘণ্টার পর ঘণ্টা থামিয়ে অলিখিত স্ট্যান্ড বানিয়ে রেখেছে। অনেক চলমান যাত্রীবাহী বাস সড়কেই যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।
যাত্রীবাহী বাস তামিম সরকার ট্রান্সপোর্ট-এর চালকের সহকারী ইকবাল হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কের বিভিন্ন বাজারে রাস্তা বিভাজক থাকায় যাত্রীদের নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে নামাতে পারি না। তা ছাড়া ওই স্থানের অন্য বাসচালকরা আমাদের সেখানে দাঁড়াতে দেবে না। তাই বাধ্য হয়ে যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে ওঠানামা করতে হয়।’
কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের বাস থামার নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য কোথায় যাত্রী ওঠানামা না করতে কঠোর নির্দেশনা আছে। কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেয়া হয়। দূরপাল্লার কিছু কিছু বাস ঝুঁকির মধ্যে মহাসড়কের যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করায়। সড়কের মাঝপথে যাত্রী নামিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে কথা বলেছি কোনো কাজ হয় না। এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের তদারকি বাড়ানো দরকার।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা ময়নামতী হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে এলোমেলো যাত্রী ওঠানামা না করতে পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন সভা সেমিনার করছি। মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল দলের এমন ঘটনা চোখে পড়লে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ বিষয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে চালক ও যাত্রীদের আরও সচেতন হওয়ার অনুরোধ করব।’