পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম নিহতের ঘটনায় ভোলায় বৃহস্পতিবার চলমান হরতাল প্রত্যাহার করেছে বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর এ ঘোষণা দেন। বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ ও ঝটিকা মিছিলের মধ্যদিয়ে হরতাল শুরু হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে তা প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে ডাকা বিএনপির হরতাল পুলিশের কঠোর পাহাড়ার মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে চলে।
তবে সকাল পৌনে ৮টায় হরতালের সমর্থনে একটি ঝটিকা মিছিল করেছে কিছু নেতাকর্মী। এরপর জেলা কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন নেতাকর্মীরা। ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল শুরু হয় বৃষ্টি দিয়ে। এর মধ্যেই মহাজনপট্টি জেলা বিএনপি অফিসসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ কঠোর অবস্থান নেয়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও রাস্তাঘাটে চলাচল ছিল অনেকটা স্বাভাবিক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচল বেড়েছে, রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতিও বেড়েছি অনেক।
সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে শহরে হরতাল সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপির কিছু কর্মীরা। মহাজন পট্টি জেলা বিএনপি অফিসের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে সদর রোডের বাংলাস্কুল মোড় পর্যন্ত ঘুরে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলকারীরা হরতালের সমর্থনে স্লোগান দেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি গঠিত ১০ সদস্যের অনুসন্ধান টিমের সদস্যরা ভোলায় এসে পৌঁছেছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে আসা কেন্দ্রীয় টিমের সদস্যরা দুপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।
ভোলায় হরতালের সমর্থনে বিএনপির সড়ক অবরোধ
এছাড়া ৩১ জুলাই সংঘর্ষে নিহত আবদুর রহিমের কবর জিয়ারতসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তাদের। অপরদিকে নিহত ছাত্রদল সভাপতির মরদেহ ভোলায় আসার অপেক্ষায় রয়েছে স্বজনসহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম বুধবার বিকেলে রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে ভোলা শহর।
বিকেলে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাস্তায় নেমে আসেন বিএনপি-ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। নুরে আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ ভোলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে জেলা বিএনপি।
এর আগে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত রোববার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলা জেলা বিএনপি শহরের মহাজনপট্টিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে। ওই কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেদিনই মারা যান জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবদুর রহিম। আহত হন অর্ধশতাধিক। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ নুরে আলম রাজধানীর গ্রিন রোডের কমফোর্ট হাসপাতালে মারা যান।