স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে হোটেল এবং রেস্টুরেন্টগুলোতে। অস্বাস্থ্যকর এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশে হোটেলগুলোতে তৈরি হচ্ছে খাবার। সেই খাবার আবার বিক্রি হচ্ছে হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনদের মাঝেই।
হাসপাতালের সামনের হোটেলগুলোতে এমন অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার উৎপাদন বা তৈরি করা হয় ৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
রোববার বিকালে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাকী দাসের নেতৃত্বাধিন ভ্রাম্যমান আদালত এই অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলে জানানো হয়েছে, ‘শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ত্রিশ গোডাউন সড়ক এবং বান্দরোডে অবস্থিত বিভিন্ন খাবারের হোটেলে অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন।
এসময় খাবারের দোকানগুলো নানা অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার চিত্র প্রত্যক্ষ করেন তারা। দেখতে পান নোংরা, অপরিষ্কার পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করা, নোংরা খাবার পানি, পানির ট্যাংকে ময়লার তলানি ও শ্যাওলা, ডিপ ফ্রিজে কাঁচা ও রান্না করা খাবার একসাথে সংরক্ষণ করা, খাবারের পাত্রে মাছি পড়ছে।
এমন দৃশ্য ছুটে ওঠে হাসপাতাল এলাকার ৬টি খাবার হোটেলে। এসব অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৫৩ ধারায় পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকা করে এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউসন প্রদান করেন সদর উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ জাকির হোসেন। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করে মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।
জেলা প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লাকী দাস।
এদিকে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রায় প্রতিটি খাবার হোটেলেই এমন অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা চলে আসছে। তার ওপর প্রতিটি দোকানেই খাবারের মূল্য রাখা হয় শহরের অন্যান্য এলাকার হোটেলের থেকে প্রায় দ্বিগুন।
হাসপাতালে দূর-দূরন্ত থেকে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনদের জিম্মি করেই অনেকটা ব্যবসা করছে এখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের তেমন তদারকি নেই। একবার অভিযান করলে পরবর্তী ছয়মাস- এক বছরে আর কোন খোঁজ থাকে না।
যে কারণে একবার সামন্য জরিমানা দিয়ে বছরজুড়ে এমন অনিয়ম করছে ব্যবসায়ীরা। ফলে হাসপাতাল এলাকায় অসহায় রোগী এবং তাদের স্বজনদের কথা ভেবে হলেও হাসপাতালের সামনের খাবার হোটেলসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিয়মিত তদারকির দাবি তুলেছেন সচেতন মহল।