রাত ১০টার পরই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখা মেলে না শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অথচ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই হাসপাতালে গুরুতর কোনো রোগী এলেও শিক্ষানবীশ চিকিৎসকই একমাত্র ভরসা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত (৪ মার্চ) শনিবার রাত ১০টা ১৪ মিনিটে বরগুনার বেতাগী থেকে অ্যাম্বুলেন্সে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আসেন হার্ট অ্যাটাক করা ষাটোর্ধ এক ব্যক্তি। ট্রলিতে তাকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। এজন্য দালালকে ১০০ টাকা ট্রলি ভাড়া দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রোগীর মেয়ে সুমি। এসময় কোনো বিভাগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখা যায়নি।
রাত পৌনে ১১টার দিকে পটুয়াখালী থেকে আসা মানছুরা বেগম (৩৫) নামে এক রোগী গুরুতর অসুস্থ হন। এসময় তার এক স্বজন চিকিৎসক না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েন। সেবিকাদের কাছে গিয়ে জানতে পারেন, বড় চিকিৎসকরা প্রতিদিন সকালে একবার ওয়ার্ডে রোগী দেখেন।
এসময় স্কুল শিক্ষক শাহনাজ নামে আরেকজন ভুক্তভোগী জানান, হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকই অধিকাংশ সময় ভরসা। অথচ তারা শিক্ষানবিস।
এছাড়াও ভুক্তভোগীদের অভিযোগের শেষ নেই এ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সোলায়মান এক ব্যক্তি জানান, এখানে কোন নিয়ম নেই। চিকিৎসা নিতে এসে রোগী ও তাদের স্বজনদের আতঙ্কে থাকতে হয়। কোনো অভিযোগ করলে ইন্টার্ন ডাক্তাররা মারধরও করে।
এছাড়া খাবারের নিম্নমান, নোংরা টয়লেট, দালালদের দৌরাত্ম্যসহ অভিযোগের অন্ত নেই দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বড় এই হাসপাতালে।
হাসপাতালের অস্থায়ী এক কর্মচারী জানান, নতুন রোগী এলেই দালাল চক্রের সদস্যরা তাদের ট্রলিতে তুলে নিজেদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। অনেক সময় রোগী টানাটানি নিয়ে দালালদের মধ্যে ঝগড়াও হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, লোকবল সংকট কাটলে অভিযোগ থাকবে না। সীমিত জনবল দিয়েই সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।