বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণির মাংস দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর গত সপ্তাহে অভিজাত রেস্তোরাঁ সুলতান’স ডাইনে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষও প্রতিষ্ঠানটির গুলশান শাখায় অভিযান চালায়। ওই অভিযানে সেখানকার কর্মীদের কথাবার্তায় সন্দেহ হয় ভোক্তার কর্মকর্তাদের।
তাই আগামীকাল সোমবার (১৩ মার্চ) পুরো বিষয়ের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য মাংস সরবরাহকারীসহ সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওইদিন অভিজাত রেস্তোরাঁটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
সোমবার সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে ওইদিনই এ বিষয়ে রায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপপরিচালক মো. মঞ্জুর শাহরিয়ার।
গত ২ মার্চ রাজধানীর গুলশানে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সাত প্যাকেট সুলতান ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানি কিনে আনেন। গুলশান শাখা থেকে আনা সেই বিরিয়ানি খাওয়ার একপর্যায়ে খাসির মাংস নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে তারা ওই শাখার নম্বরে কল করেন। পরবর্তীতে দুজন লোক নতুন খাবারের প্যাকেট নিয়ে আসেন। ওই সময় সেখানে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
Sultans Dineপরে বিষয়টি সরেজমিন দেখতে গত বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুর শাহরিয়ারের নেতৃত্বে একটি দল সুলতান ডাইনের গুলশান শাখায় অভিযানে যায়। সেখানে নানা বিষয় কথাবার্তার পর সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষকে মঞ্জুর শাহরিয়ার বলেন, আপনাদের কথার কোনো মিল নেই। কখন কি বলছেন তার মিল নেই। আপনাদের কথা যে কেউ শুনলে সন্দেহ পোষণ করবে। সেদিনের ভিডিওতেও সন্দেহজনক আচরণ ছিল। আজকে যা যা বলেছেন সব রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ১৩ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টায় উপস্থিত হয়ে শুনানিতে অংশ নেবেন। ওইদিনই আপনাদের রায় দেওয়া হবে।
ওইদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপপরিচালক মঞ্জুর শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা মাংস ল্যাবে পাঠিয়ে টেস্ট করব। আপনারাই দেখেছেন তাদের কথার সঙ্গে তথ্যের মিল নেই। সবকিছু তদন্ত হচ্ছে।’
Sultans Dineএকই দিন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একটি টিম অভিযান চালায় সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখায়। তারা মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপদ খাদ্যের প্রতিবিধান মেনে চলছে কি-না তা দেখতেই এই অভিযান চালায়। সেই অভিযানে নানা অব্যবস্থাপনা পেয়ে সেগুলো ঠিক করতে তাদের ১০ দিন সময় দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০ মার্চ আবারও তদারকি করতে যাবেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের টিম। এরমধ্যে সংশোধন না হলে সেদিন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান’স ডাইনের গুলশান শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল হক আশরাফ বলেছেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ যা যা করতে বলেছেন আমরা তা প্রতিপালন করব। এছাড়া ভোক্তা অধিকার এসেছিল। সবকিছু দেখেছেন। আগামী সোমবার (১৩ মার্চ) শুনানি আছে, সেখানে থাকতে বলেছেন। আমরা থাকব।’