৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৮:৩২
শিরোনামঃ

বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে মারা যান একজন মা ও নবজাতক

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ বুধবার, মে ১০, ২০২৩,
  • 158 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

বিশ্বে প্রতি বছর গর্ভাবস্থায়, প্রসবের সময় বা জন্মের প্রথম সপ্তাহে ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি নারী ও শিশু মারা যায়। এটি প্রতি সাত সেকেন্ডে একজনের মৃত্যুর সমান। নতুন এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫ সাল থেকে গর্ভাবস্থায় মৃত্যু হ্রাসে বিশ্বব্যাপী অগ্রগতি হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সংস্থাটি ফলাফলের ওপর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এই মৃত্যুগুলো বেশিরভাগই সঠিকভাবে যত্ন এবং সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে ঘটে থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ধক্য, মাতৃ, নবজাতক, শিশু এবং কিশোর স্বাস্থ্যের পরিচালক ডা. আংশু ব্যানার্জি বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, বিশ্বব্যাপী গর্ভবতী নারী এবং নবজাতক অগ্রহণযোগ্যভাবে হারে মারা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারি তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আরও বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অতিরিক্ত চাপের কারণ হিসেবে দারিদ্য ও মানবিক সংকটকে দায়ী করেছে সংস্থাটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ২ লাখ ৯০ হাজার মাতৃমৃত্যু হয়। এছাড়া ১.৯ মিলিয়ন (১৯ লাখ) শিশু মায়ের গর্ভে মারা যায় (গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর) এবং ২.৩ মিলিয়ন (২৩ লাখ) শিশুর জন্মের প্রথম মাসে মৃত্যু হয়।

ডা. আংশু ব্যানার্জি বলেন, ‘আমরা যদি ভিন্ন ফলাফল দেখতে চাই তবে আমাদের অবশ্যই ভিন্নভাবে কাজ করতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাতে আরও এবং স্মার্ট বিনিয়োগ প্রয়োজন, যাতে প্রতিটি নারী এবং শিশু (তারা যেখানেই থাকুক না কেন) স্বাস্থ্য এবং বেঁচে থাকার সর্বোত্তম সুযোগ পান।’

২০২১ সালে করোনা মহামারি চলাকালীন ১২০০ এরও বেশি মার্কিন নারী গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের কিছু পরে মারা গিয়েছিলেন। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মার্চ মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে যে, এটি ছয় দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রাথমিক সংখ্যা অনুসারে এই সংখ্যাটি ২০২২ সালে আনুমানিক ৭৩৩ এ নেমে এসেছে।

হার্ভার্ডের মাতৃস্বাস্থ্য টাস্ক ফোর্সের পরিচালক ড. হেনিং টাইমেয়ার জুলাই ২০২২ সালে ‘ফেস দ্য নেশন’-এ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, জাতিগত বৈষম্যের কারণ নির্ধারণ করা মূলত জনস্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি।

টাইমেয়ার উল্লেখ করেছেন যে এই মৃত্যুর বেশিরভাগই ‘প্রতিরোধযোগ্য’।

এদিকে গর্ভবতী নারীদের সহজ এবং সস্তা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রদান- যেমন অ্যাসপিরিন প্রদান প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নবজাতক ১০ লাখের বেশি শিশুকে মৃত অবস্থায় জন্ম নেয়া বা জন্মের পর মারা যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। মঙ্গলবার নতুন এক গবেষণায় একথা বলা হয়েছে।

গবেষকদের আন্তর্জাতিক একটি দলের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ শিশু প্রিম্যাচিওর বা কম ওজন নিয়ে জন্মায়। তারা আরও জানায় এই ক্ষেত্রে প্রায় কোনো অগ্রগতিই হচ্ছে না।

গবেষকরা ৮১টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে গর্ভাবস্থা এবং শিশুর জন্মের সময় নারী ও শিশুর যত্ন নেয়ার জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত একাধিক গবেষণাপত্র অনুসারে, আটটি প্রমাণিত এবং সহজে বাস্তবায়নযোগ্য ব্যবস্থা এই দেশগুলোতে ৫ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি মৃত সন্তান প্রসব প্রতিরোধ করতে পারে।

এই ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট, প্রোটিন এবং শক্তির পরিপূরক, কম-ডোজের অ্যাসপিরিন, হরমোন প্রোজেস্টেরন, ধূমপানের ক্ষতি সম্পর্কে শিক্ষা এবং ম্যালেরিয়া, সিফিলিস ও প্রস্রাবে ব্যাকটেরিয়ার চিকিৎসা।

গবেষণায় দেখা গেছে, যদি গর্ভবতী নারীদের জন্য স্টেরয়েডগুলো দেয়া হয় এবং ডাক্তাররা অবিলম্বে নাভির কর্ডটি না কাটেন তবে ৪ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি নবজাতক শিশুর মৃত্যুও প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

এই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের জন্য আনুমানিক ১১০ কোটি ডলার ব্যয় হবে বলা গবেষকরা জানিয়েছেন। ফিনল্যান্ডের টেম্পের ইউনিভার্সিটির প্রধান গবেষণা লেখক এবং অধ্যাপক পার অ্যাশর্ন বলেছেন, এটি অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রোগ্রামগুলো যা পায় তার একটি ভগ্নাংশ।

সূত্র: সিবিএস, রয়টার্স

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo