৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৩:২৮
শিরোনামঃ

সারা জীবন সামলালেন সংসার, মৃত্যুর পর হলো ‘বেওয়ারিশ’ দাফন

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ মঙ্গলবার, আগস্ট ৮, ২০২৩,
  • 320 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

সারা জীবন সংসারের ঘানি টেনে শেষ বয়সে এসে ওমর ফারুক (৫০) পড়েন নিঃসঙ্গতায়। নিজের উপার্জন দিয়ে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে বড় করেছেন। বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ হলেও স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকতেন জেলার কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামের একটি ভাড়াবাসায়। ওই গ্রামে ছোট দোকান করে সংসারের হাল ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। খরচ মেটাতে না পেরে রাতে করতেন প্রহরীর চাকরিও। কিন্তু তুচ্ছ কারণে তাঁকে ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী চলে যান অন্যত্র।

স্থানীয় লোকজন জানান, স্ত্রী-সন্তান চলে যাওয়ার পর একা থাকতে শুরু করেন ওমর ফারুক। নাওয়া-খাওয়া না পেয়ে একসময় বুক ব্যথা, পাইলসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন তিনি। এ সময় ইছানগর গ্রামে বসবাসরত অসুস্থ ফারুকের পাশে এসে দাঁড়ান প্রতিবেশী কামরুন নাহার। তিনি ফারুকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁকে নিতে রাজি হননি স্ত্রী-সন্তানেরা।

ফারুকের অসুস্থতা ও পড়ে থাকার খবর শুনে এগিয়ে আসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদুল হক সুমন। তিনি ফারুককে ভর্তি করান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত শনিবার রাতে মারা যান ফারুক।

মৃত্যুর খবর পরিবারের সদস্যদের জানালে তাঁরা লাশ নিতে ও দাফনে অস্বীকৃতি জানালে লাশের দায়িত্ব নেন ইউপি সদস্য সুমন।

সুমন বলেন, ‘ওমর ফারুককে অনেক দিন ধরে এলাকায় দেখে আসছি। তাঁর দুঃসময়ে পাশে থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁর পরিবারের কেউ তাঁর পাশে আসেনি। ফারুক মারা গেলে তাঁদের ছেলে মেহেদীকে ফোন করি। তিনি ব্যস্ত আছেন বলে বাবার লাশ নিতে রাজি হননি। এই অবস্থায় লাশ নিয়ে আমি বিপাকে পড়ি।’

ইউপি সদস্য সুমন লাশের ঘটনা কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদকে জানালে তিনি কর্ণফুলীর গাউসিয়া কমিটিকে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে লাশ দাফনের অনুরোধ জানান। শনিবার মধ্যরাতে ভারী বর্ষণের মধ্যেই গাউসিয়া কমিটি ফারুকের লাশ দাফন করে।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি কর্ণফুলীর গাউসিয়া কমিটিকে লাশটি দাফনের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করি।

কর্ণফুলী গাউসিয়া কমিটির মানবিক টিমের সমন্বয়ক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, ‘মোবাইল ফোনে ওসি স্যারের কল পেয়ে আমরা হাসপাতাল থেকে লাশ এনে গোসল করিয়ে দাফন করি।

এ বিষয়ে জানতে ফারুকের ছেলে মেহেদী হাসানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি সংযোগ কেটে দেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo