৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ২:৪৯
শিরোনামঃ

বরিশালে এবার লঞ্চ বন্ধ হওয়ার আভাস

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ বুধবার, নভেম্বর ২, ২০২২,
  • 202 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে বরিশালে দু’দিন বাস ও তিন চাকার যানবাহন বন্ধ ঘোষণার পর এবার যাত্রীবাহী লঞ্চ বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে। ৪ ও ৫ নভেম্বর লঞ্চ বন্ধ রাখার জন্য মালিকদের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে যে কোনো সময় লঞ্চ বন্ধের ঘোষণাও আসতে পারে।

একাধিক লঞ্চ মালিক এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সমকালকে জানিয়েছেন, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস সোমবার বিকেলে পোর্ট রোড লঞ্চ মালিক সমিতি ভবনে গিয়ে শুক্র ও শনিবার লঞ্চ বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ দেন। এর পর সমিতির পক্ষ থেকে মালিকদের ফোন করে দু’দিন লঞ্চ বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে।

একাধিক মালিক জানিয়েছেন, পরিমল দাস নির্দেশ দেওয়ায় লঞ্চ মালিকরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। কারণ, তিনি বরিশাল লঞ্চঘাটের তালিকাভুক্ত শ্রমিক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত শ্রমিক পেশাই ছিল তাঁর একমাত্র জীবিকা। দল ক্ষমতায় আসার পর তিনি শ্রমিক লীগের পদপদবি পেয়ে দাপুটে নেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি লঞ্চঘাটের নিয়ন্ত্রক ছাড়াও মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি।

মালিকরা জানান, একজন শ্রমিক হয়ে পরিমল দাস এ ধরনের নির্দেশ দেওয়ায় তাঁরা অপমানবোধ করছেন। তবে ক্ষমতাসীন দলের শ্রমিক নেতা হওয়ায় এ বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেননি।

এ বিষয়ে পরিমল চন্দ্র দাসকে ফোন দেওয়া হলে সমকালকে তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’ কেন বন্ধ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি জানেন না, কেন বন্ধ হবে?’ তিনি লঞ্চ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি তো সাধারণ শ্রমিক, আমি কেন লঞ্চ বন্ধ করতে বলব? শুনেছি, মালিকদের কিছু দাবি আছে; তাই তাঁরা দুই দিন লঞ্চ বন্ধ রাখবেন।’

এ বিষয়ে জানতে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌযাত্রী পরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বরিশাল জেলা শাখার আহ্বায়ক মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেন, লঞ্চ বন্ধ রাখার জন্য তিনি কাউকে নির্দেশনা দেননি। সংগঠনের নেতা হিসেবে এসব বিষয়ে তাঁর জানাও নেই।

বিআইডব্লিউটিএর বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, লঞ্চ বন্ধ রাখার বিষয়ে মালিক পক্ষ থেকে তাঁদের কোনো কিছু জানানো হয়নি। মালিকদের কোনো দাবি-দাওয়া আছে কিনা, এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সঙ্গে মালিকরা আলোচনাও করেননি।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলা সভাপতি মাস্টার হাশেম জানান, শ্রমিকদের স্থানীয় পর্যায়ে কোনো দাবি-দাওয়া নেই। তাই স্থানীয়ভাবে কোনো ধর্মঘট করার পরিকল্পনাও তাঁদের নেই। এ নৌযান শ্রমিক নেতা আরও বলেন, ‘শুনেছি খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশের সময় ওপর মহলের নির্দেশে লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। বরিশালেও এ ধরনের কোনো নির্দেশ এলে শ্রমিকরা লঞ্চ চালাবেন না।’

ঢাকা-বরিশাল রুট ছাড়াও বরিশালে অভ্যন্তরীণ ১১ রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে। তার মধ্যে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা এবং ভোলা জেলার সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগ নেই। ওই এলাকায় যাতায়াতে লঞ্চই একমাত্র ভরসা। তা ছাড়া উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলার সঙ্গে বরিশালের নৌপথ রয়েছে। বাস চলাচল বন্ধ হলে বিকল্প হিসেবে নৌপথে যাতায়াতের সুযোগ রয়েছে। লঞ্চ ধর্মঘট দেওয়া হলে সে পথও বন্ধ হয়ে যাবে।

একের পর এক পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে বিএনপির বরিশাল মহানগর আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার পর বরিশালেও সরকার একই কাজ করবে তা আমাদের জানা ছিল। তাই আমরা সে রকম প্রস্তুতিই নিয়ে রেখেছি। বিভাগের অন্যান্য জেলার অনেক নেতাকর্মী এরই মধ্যে বরিশালে অবস্থান নিয়েছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo