৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সকাল ১০:২৯
শিরোনামঃ

বরিশালে ওঝার বিচার চেয়ে নারীর সংবাদ সম্মেলন

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শনিবার, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩,
  • 198 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

ডায়াবেটিস নির্মূলের উদ্দেশে ওঝার কাছে গিয়ে ঝাড়ফুঁকে উপকার না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী। শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দাবি করে সেই ওঝার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ এনেছেন তিনি। চিকিৎসার জন্য ওঝাকে দেওয়া টাকাও ফেরত চাইলেন ওই নারী।

 

 

অভিযুক্ত ওঝার নাম হেমায়েত মাস্টার। বরিশালের কাউনিয়া প্রধান সড়কে পাশেই থাকেন তিনি। অভিযোগকারী নারীর নাম মমতাজ বেগম। তিনি বরিশাল নগরের কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা।

 

 

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আর বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

মমতাজ বেগম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার মতো অন্য কোনো পরিবার যেন ওঝার ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

 

তিনি বলেন, ২ বছর আগে জানতে পারি কাউনিয়া প্রধান সড়ক সংলগ্ন হেমায়েত মাস্টার নামে এক ওঝা ডায়াবেটিক রোগ নির্মূল করতে পারেন। আমি ডায়াবেটিসসহ পলিপাস ও পাইলস রোগেও আক্রান্ত ছিলাম। এসব রোগের কথা হেমায়েত ওঝাকে জানালে তিনি বাইরের চিকিৎসা নিতে বারণ করেন। আমাকে একেক সময় চা, শরবত ও ডাবের পানি পান করিয়ে চিকিৎসা দেন তিনি। ওঝার নির্দেশে জিন এসে রোগীদের চিকিৎসা করে এমন কথা আমাকে বলা হয়।

 

 

মমতাজ বেগম বলেন, গত দুই বছরে দফায় দফায় আমি নগদ ২ লাখ টাকাসহ প্রায় ৬ লাখ টাকার মাছ-মাংস ও ফল দিয়েছি হেমায়েত ওঝার বাড়িতে। তারপরও আমার রোগমুক্তি মেলেনি, আমি সুস্থও হইনি। চিকিৎসার নামে ঝাড়ফুঁক দেওয়ার সময় প্রায়ই ওঝা আমাকে নামাজ রোজার প্রয়োজন নেই বলতেন এবং আমার শরীরে ১ টা ভালো ও ২টা খারাপ জিন দিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন। যাতে আমিও সকল রোগের চিকিৎসা দিয়ে সারাজীবন ঘরে বসে খেতে পারি।

তিনি বলেন, আমাকে এও বলা হয়েছে কুকুড় বিড়ালের মধ্যে নিজের আত্মা প্রবেশ করে সকল স্থানে আসা-যাওয়া করতে পারব।

মমতাজ বেগম বলেন, কিছুদিন পরে আমি ওঝার বাড়ি যাই। আমাকে সুস্থ করে দিতে নয়তো চিকিৎসার পেছনে নগদ টাকাসহ যে ব্যয় করেছি তা ফেরত দেওয়ার জন্য ওঝাকে বলি। তখন ওই ওঝা আমাকে চিরতরে মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। নয়তো এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমি ও আমার পরিবারের লোকজনের ক্ষতির হুমকি দেয় হেমায়েত ওঝা।

তিনি বলেন, ৬ মাস বা একবছর আগেও আমি এমন ছিলাম না। দিনে দিনে আমি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছি। আমি বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অভিযুক্ত হেমায়েত ওঝা বলেন, মানত বাবদ কিছু টাকা মমতাজ বেগম আমাকে দিয়েছেন। এর বাইরে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে মমতাজ বেগম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কার্যালয়ে যান।

শনিবার বিকেল পৌনে ৪ টায় তিনি জানান, পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, সেখান থেকে আমাকে উপ-পুলিশ কমিশনারের (উত্তর) কার্যালয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

এদিকে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo