৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সন্ধ্যা ৬:০০
শিরোনামঃ

বরিশালের আদালতে মামলার পাহাড়!

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ সোমবার, মার্চ ৬, ২০২৩,
  • 170 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

গত পাঁচ বছরে বরিশালের পাঁচ আদালতে মামলার পাহাড় জমেছে। ফলে দুর্ভোগের শেষ নেই বিচার প্রার্থীদের। তারা বলছেন, বছরের পর বছর আদালত ও আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মামলা নিস্পত্তি হচ্ছে না। এসব কারণে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, আমলী আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শিশু আদালত, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং আমলী আদালতে মামলার সংখ্যা ২৪ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ২০২২ সালের মামলা রয়েছে ৬ হাজার ৭১২টি।

বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত:
বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বর্তমানে বিচারাধীন মামলা আছে ২ হাজার ৯৯৯টি। যার মধ্যে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচারাধীন ৪৮৬টি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, এ আদালতে গত বছর (২০২২ সালে) ফৌজদারি নতুন মামলা ছিল ৫ হাজার ৩৫২টি। এর আগের বছর (২০২১ সালের) মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৮৫১টি। অন্য আদালত থেকে এসেছে এক হাজার ৭২০টি। এ নিয়ে এই একটি আদালতেই মামলার স্তুপ হয়েছিল ৯ হাজার ৯২৩টি। এর মধ্য থেকে জেলা জজ আদালত থেকেও বিভিন্ন আদালতে বদলি করা হয় ২ হাজার ৩টি। গত এক বছরে নিস্পত্তি হয়েছে ৪ হাজার ৯২১টি মামলা।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট:
এদিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা পাঁচ হাজার ৮১৯টি। যার মধ্যে পাঁচ বছরেরও বেশি পুরানো মামলা আছে ১০৫টি।

চিফ মেট্রোপলিটন আমলী আদালত:
৪ হাজার ১১১টি মামলা রয়েছে চিফ মেট্রোপলিটন আমলী আদালতে। এ আদালতে দীর্ঘ মেয়াদী কোনো মামলা নেই।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে:
নতুন-পুরনো মিলিয়ে মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৫৩০। এ আদালতে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচারাধীন আছে ৪২টি মামলা।
আদালত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছর (২০২২ সালে) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এক হাজার ২০টি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। অন্য আদালতে বদলি করা হয়েছে ৩টি মামলা।

বরিশাল শিশু আদালত:
গত ২০২২ সালে এ আদালতে নতুন কোনো মামলা হয়নি। তবে অন্য আদালত থেকে পাঠানো হয়েছে ৩১৮টি। ওই সময়ের মধ্যে ৩৩১টি মামলা নিস্পত্তি করা হয়েছে। এ আদালতে বর্তমানে বিচারাধীন মামলা রয়েছে এক হাজার ১৩৭টি।

চিফ জুডিসিয়াল বিচার আদালত:
এ পর্যন্ত মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৬৭টি। যার মধ্যে পাঁচ বছর ধরে নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ৫২টি মামলা। তবে গত এক বছর নিস্পত্তি হয়েছে ১১৩ ও অন্য আদালতে পাঠানো হয় ১৮টি মামলা।

এদিকে মামলার জট নেই মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে। মাত্র ৩১টি মামলা রয়েছে এ ট্রাইব্যুনালে।

ভুক্তভোগী আনিসুর রহমান জানান, আসামি পক্ষের সাক্ষীরা নিয়মিত আদালতে আসছে না। আবার অনেক সময় হাজিরা দিতে এসে শুনি বিচারক নেই। অথচ প্রতি তারিখেই আইনজীবীসহ বিভিন্ন দফতরে টাকা দিতেই হচ্ছে।

তবে বরিশালের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, আইনজীবীদের বিরুদ্ধে এমন ঢালাও অভিযোগ ঠিক নয়।

তাঁর মতে জট কমাতে হলে মামলার তদন্তে কর্মকর্তাদের সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি কৌশলীদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ ইমন বলেন, ‘বরিশালের আদালতগুলোতে শতাধিক রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। এগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা হলে মামলা জট অনেক কমবে।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মামুন চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক এজলাস ও বিচারক সংকটের কারণে মামলার স্তুপ জমেছে।

এছাড়া একজন বিচারককে একাধিক মামলার শুনানি করতে হয়। অনেক সময় সাক্ষীর অনুপস্থিতিসহ নানা কারণে তদন্তের ধীরগতি দেখা দেয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালত থেকে সময়ের আবেদন করেন। এসব ক্ষেত্রেও বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেয় বলেও জানান পিপি।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo