৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ২:৩২
শিরোনামঃ

প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে সেই নবজাতক ও বাবা-মায়ের যাতায়াত ফ্রি

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শুক্রবার, আগস্ট ১৯, ২০২২,
  • 183 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকের পরিবারকে নগদ অর্থ উপহার দিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে ওই নবজাতক ও তার মা-বাবার প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে যাতায়াত আজীবনের জন্য ফ্রি ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) ভোরে এ ঘোষণা দেন লঞ্চের সুপারভাইজার জিল্লুর রহমান। তিনি জানান, প্রিন্স আওলাদ লঞ্চে কোনো নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। বিষয়টি লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তারাও খুব খুশি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ওই শিশুর পরিবারকে লঞ্চের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শিশু ও তার মা-বাবার জন্য এই লঞ্চে যাতায়াত ফ্রি করা হয়েছে।

নবজাতকের মামি রুমকি বেগম বলেন, এখন বাচ্চা ও তার মা শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ আছে। আমরা খুবই আনন্দিত। কোনো বিপদ ছাড়াই আল্লাহ আমাদের হেফাজত করেছেন। লঞ্চে একজন নার্স ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন ভোরে সিজার করানোর জন্য। তবে একজন ধাত্রী পেয়ে যাওয়ায় সন্তান প্রসবে কোনো সমস্যা হয়নি।

ধাত্রী বলেন, ওদের পাশের সিটেই আমরা ছিলাম। অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি নিজে তত্ত্বাবধায়ন করে সন্তান প্রসব করাই।

প্রসূতির মা বলেন, আগামী মাসের ৬ তারিখ সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারিত ছিল। আজ লঞ্চে ওঠার পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে খবর পেয়ে আমিও চলে আসি। লঞ্চেই মাঝরাতে নাতি হয়েছে। এটি আমার মেয়ের দ্বিতীয় সন্তান। ওর আরেকটি ১০ বছরের ছেলে রয়েছে।

লঞ্চের যাত্রী ফরিদা বেগম বলেন, সারারাত যাত্রীরা সেবা শুশ্রূষা করেছি। মা-ছেলে দুজনেই ভালো আছে। ভোরে ছেলেকে তার মায়ের কোলে দিয়েছি।

লঞ্চে চিকিৎসক রাখার দাবি

প্রসূতি নারী অসুস্থ হওয়ার শুরু থেকেই ঘটনা দেখেছেন রাকিব নামে এক তরুণ। তিনি বলেন, প্রসব বেদনা ওঠার পরে টানা দুই ঘণ্টা চেষ্টার পরে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। এখানে কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না। প্রথম অবস্থায়তো যাত্রী নার্স বা ডাক্তার কাউকেই পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে একজন পাওয়া যায়। তবে এক নারী ধাত্রী দায়িত্ব নিয়ে প্রসব করিয়েছেন। আমি বলবো, লঞ্চে সন্তান প্রসব এটিই প্রথম ঘটনা নয়, এর আগেও এমন ঘটেছে অন্যান্য লঞ্চে। এছাড়া দীর্ঘ সময়ের এই যাত্রায় অনেকের সঙ্গে অনেক ধরনের বিপদ ঘটতে পারে। তখন প্রাথমিক চিকিৎসারও কোনো ব্যবস্থা থাকে না। এজন্য লঞ্চে একজন চিকিৎসক রাখা উচিত। যাতে অসুস্থ রোগীকে অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারে।

আরেক যাত্রী সোলাইমান হোসেন বলেন, প্রথম অবস্থায় প্রসূতি মায়ের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হচ্ছিল। তবে সবাই এগিয়ে আসায় কাজটি সহজ হয়েছে। তবে আমরা সকলেই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। যদি কোনো অসুবিধা হয়ে যায়, তাহলে বিনা চিকিৎসায় মারা যেত ওই নারী। এজন্য লঞ্চে একজন অন্তত চিকিৎসক রাখা উচিত।

প্রসঙ্গত, ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে বাবার বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের শোলনা ফিরছিলেন অন্তঃসত্ত্বা ঝুমুর বেগম। সঙ্গে তার আরও ৫ স্বজন ছিলেন। প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চের ডেকে অবস্থানকালে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রসব বেদনা ওঠে তার। রাত ১টার দিকে ধাত্রীর সহায়তায় ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। নবজাতকের বাবা মো. হারিছ কুমিল্লার জামালপুরে মুরগি বিক্রির দোকানে শ্রমিকের কাজ করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo