‘ফলে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও প্রবল। সেই পরিস্থিতিতে নিজেদের দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ইউরোপীয় নেতাদের অন্তত একটি অংশ (ইউক্রেনে) সহায়তা পাঠানো বন্ধ করে ইউক্রেনকে শান্তি চুক্তিতে আসতে চাপ দেবে— এটাই স্বাভাবিক।’

‘সুতরাং, আমরা এখন অপেক্ষা করব। পর্যাপ্ত সময় আমাদের হাতে আছে।’

অপর কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি শরৎ পেরিয়ে শীত পর্যন্ত এই যুদ্ধ দীর্ঘায়ীত হয়, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুবই কঠিন হবে। সুতরাং তারা (ইউরোপ ও ইউক্রেন) যে যুদ্ধবিরতি চাইবে— এমন আশা রয়েছে।’

এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জ্বালানি পণ্যকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার ইচ্ছে নেই রাশিয়ার।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার ‍দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

চলতি আগস্টে ষষ্ঠ মাসে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।

তবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও তার সাধ্যমতো জবাব দিচ্ছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সহায়তাপুষ্ট ইউক্রেন বাহিনী রাজধানী কিয়েভ ও দ্বিতীয় প্রধান শহর খারকিভে রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে রুখে দিয়েছে; গত এপ্রিলে রুশ নৌবাহিনীর ফ্ল্যাগশিপ মস্কোভা কৃষ্ণ সগারে ডুবিয়ে দিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা। চলতি মাসেই ক্রিমিয়া দ্বীপের রুশ বাহিনীর বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করেছে, এছাড়া ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযানরত রুশ বাহিনীর রসদ সরবরাহ ব্যবস্থায় লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলায়াক রয়টার্সকে বলেন, ‘ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখল করেছে, সেসব থেকে সেনা প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা হতে পারে না। এটা আমাদের সামরিক বাহিনীর মর্যাদার প্রশ্ন।’

বুধবার ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবস ছিল। সে উপলক্ষে দেশটির জনগণের উদ্দেশে দেওয়া এক শুভেচ্ছাবার্তায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, ‘যুদ্ধের শুরু থেকে ইইউ আপনাদের পাশে ছিল। যতদিন এই যুদ্ধ চলবে, ততদিন ইইউয়ের সমর্থনও অব্যাহত থাকবে।’

তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ও ইউরোপে মার্কিন সেনাঘাঁটির সাবেক কমান্ডার বেন হজেস রয়টার্সকে বলেন, ‘সামনে যুক্তরাষ্ট্রের মিডটার্ম নির্বাচন রয়েছে। যুক্তরাজ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী খুঁজছে। গ্যাসের অভাবে মৃত্যুর আশঙ্কা করছে জার্মানি….এবং আমার অভিজ্ঞতা বলছে— ক্রেমলিন এসব ব্যাপার বেশ মনযোগ সহকারে পর্যবেক্ষন করছে।’

‘কেবল অস্ত্র-সৈন্য দিয়ে যুদ্ধ জেতা যায় না। জয়ের জন্য অস্ত্র- সৈন্য-রসদের পাশাপাশি যে ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ— তা হলো ইচ্ছেশক্তি।’

‘এখন প্রশ্ন হলো— আমাদের ইচ্ছেশক্তি ক্রেমলিনের চেয়ে তীব্র কিনা? আমার মতে— এটাই এখন আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

আরও পড়ুন

হেলমেট না পরায় জরিমানা, থানার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিলেন লাইনম্যান

হেলমেট না পরায় জরিমানা, থানার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিলেন লাইনম্যান

যুক্তরাজ্যে রেস্তোরাঁয় ৫০ কিশোর-কিশোরীর খাবার চুরি-লুটপাট

যুক্তরাজ্যে রেস্তোরাঁয় ৫০ কিশোর-কিশোরীর খাবার চুরি-লুটপাট

অচেনা যুবকের কাঁধে মাথা রেখে ঘুম তরুণীর, পরে প্রেম

অচেনা যুবকের কাঁধে মাথা রেখে ঘুম তরুণীর, পরে প্রেম

এলএনজির রমরমা বাণিজ্য, ৬০ শতাংশ রপ্তানি বাড়াচ্ছে আমেরিকা

এলএনজির রমরমা বাণিজ্য, ৬০ শতাংশ রপ্তানি বাড়াচ্ছে আমেরিকা

কাশ্মির নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে পাকিস্তান, দাবি ভারতীয় ওয়েবসাইটের

কাশ্মির নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে পাকিস্তান, দাবি ভারতীয় ওয়েবসাইটের

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সাহায্য চায় পাকিস্তান

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সাহায্য চায় পাকিস্তান

রাশিয়ায় বসে ইউক্রেনে আগ্রাসনের সমালোচনা, রুশ রাজনীতিক আটক

রাশিয়ায় বসে ইউক্রেনে আগ্রাসনের সমালোচনা, রুশ রাজনীতিক আটক

৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার কবলে ইউরোপ

৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার কবলে ইউরোপ