৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ২:৪৪
শিরোনামঃ

৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন পটুয়াখালী, ২শ নবজাতক-শিশুর দুর্ভোগ চরমে

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট টাইমঃ শনিবার, অক্টোবর ১৫, ২০২২,
  • 186 সংবাদটি পঠিক হয়েছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পটুয়াখালী পাওয়ার গ্রিড থেকে পৌর এলাকার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে বিকাল ৩টা ২২ মিনিট থেকে ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না পটুয়াখালী শহরে। কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হলেও পটুয়াখালী সদর হাসপাতাল বিদ্যুৎহীন থাকে।

পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড ও নবজাতক বিশেষ সেবা ইউনিটের চিকিৎসাধীন ২শ নবজাতক ও শিশুসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় ৫ শতাধিক রোগী ও অভিভাবকরা পড়েন চরম দুর্ভোগে।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে সংযোগ চালু হলেও, সাড়ে ১২টায় আবার চলে যায়। শহরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বাসা বাড়ি, হাট বাজার, হাসপাতাল ক্লিনিক, জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলোর সেবা বন্ধ থাকে।

বিকাল থেকেই বিদ্যুৎহীন হাসপাতালের কক্ষে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে নবজাতক ও শিশুদের নিয়ে ছুটাছুটি করছেন অভিভাবকরা। গাইনি ওয়ার্ডে বিগত দিনসহ আজকের সিজারে ডেলিভারির ৫৪ জন রোগী ও নবজাতকের কষ্ট চরম আকার ধারণ করে। এদিকে কোনো কোনো ওয়ার্ডে পানিও ছিল না।

শিশু ওয়ার্ডের ৮২ জন শিশুদের নিয়মিত চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হয়। সাড়ে ৩টার পর অনেক শিশুদের গ্যাস দেওয়াও বন্ধ ছিল। স্ক্যানোতে ভর্তিকৃত সংকটাপন্ন ৭০ জন নবজাতক ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে বিকল্প বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা নেই। পূর্বের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর থাকলেও তা কখনো চলেইনি। সেটি এখন অকেজো বলে দাবি করেছেন কর্তৃপক্ষ। সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতকের অভিভাবক শাখারিয়া এলাকার সিরাজুল হক বলেন, এটা কেমন সেবা প্রতিষ্ঠান।

একটা হাসপাতালে ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই, জেনারেটর তো থাকবে। কর্তৃপক্ষের কোনো কথা নেই। তারা যে যার মতো। সিজারের রোগী এখন ছটফট করছে। গাবুয়া এলাকার আবুল কালাম ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, শুধু নামেই এত বড় একটা হাসপাতাল, কাজে কিছু না। নেই সেবার মান, নেই সুযোগ সুবিধা।

চিকিৎসা সেবা নাকি উন্নতি হইছে? তাহলে এত বড় হাসপাতালে একটা জেনারেটর কেন নাই। কেন শত শত শিশু নবজাতক ও নারীরা এত কষ্ট পাচ্ছে। দুমকির রুমা বেগম বলেন, আমি আমার মাকে নিয়ে আসছি। তার আজ অপারেশন হয়েছে ব্লাড দিচ্ছিলাম, কিন্তু অন্ধকারে কিছু দেখছিলাম না, ব্লাড শেষ হয়ে গিয়ে, আবার উপরে ব্লাড উঠে গেছে। কি যে কষ্টে আছি বলতে পারবো না। এই কয়টা ঘণ্টা জীবনটা নরক হয়ে গেছে।

পুরো হাসপাতাল চলছে মোবাইল বা বাসা বাড়ির টর্চ লাইটের আলোতে। এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মতিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে, হাসপাতাল অন্ধকার তো থাকবেই। আমরা কি করবো।

একটা জেনারেটর ছিল- সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা অকেজো, এখন চলে না। মা ও শিশুরা চরম দুর্গতিতে আছে, বিকল্প কোনো ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কিছুই করার নেই।

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, পাওয়ার গ্রিড থেকে পৌর এলাকার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ট্রান্সফরমায় ত্রুটির কারণে বিকাল ৩টা ২২ মিনিটে পটুয়াখালী শহরের ফিডারের ১৩৩ কেভির গ্রিড সাবস্টেশন থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

নতুন ট্রান্সফরমা সংযোজন করা হয়েছিল, তাও কেটে যাচ্ছে। দুই সংযোগ সচল হওয়ার পর, আবারো ত্রুটি দেখা দিয়েছে। আমরা ৩টা থেকে বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তাসহ সবাই অবস্থান করে কাজ করছি।

এই পোস্টটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ ...

© All rights reserved © 2021
Developed By Engineerbd.net
EngineerBD-Jowfhowo