ঝালকাঠিতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে প্রতিটি নদ-নদীর পানি। এতে তলিয়ে গেছে অর্ধশত গ্রাম। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ, নষ্ট হচ্ছে আমন বীজতলাসহ বর্ষাকালীন শাক-সবজির ক্ষেত।
গ্রামীণ জনপদের অধিকাংশ রাস্তাই তলিয়ে গেছে পানিতে। ফলে ওই সব গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ার এবং বৃষ্টির কারণে রোববার দুপুর দেড়টার দিকে নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক বাড়তে শুরু করে। রাতে অতিরিক্ত পানি বাড়ার ফলে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামাঞ্চল ছাড়াও জেলা শহরের চরাঞ্চল হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেক পরিবারের রান্না-খাওয়া বন্ধ রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদীর অংশে উপজেলা পরিষদ ভবন, নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, আমুয়া, বড় কাঁঠালিয়া, শৌলজালিয়া, কচুয়া ফেরিঘাটসহ ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া রাজাপুরের বড়ইয়া এলাকার পালট, কাচারীবাড়ি, নাপিতের হাট, চল্লিশ কাহনিয়া, বাদুরতলা ও মঠবাড়ি এলাকার নিম্নাঞ্চলসহ দশটি গ্রাম। নলছিটির বারইকরণ ও ফেরিঘাট এলাকাসহ ১০টি গ্রাম এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলার কলাবাগান, পোনাবালিয়া, দেউরি, চর ভাটারাকান্দা, দিয়াকুলসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পানি বৃদ্ধির ফলে কৃষি, মৎস্যসহ গ্রামের কাঁচা রাস্তা ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাসান জানান, জেলার সুগন্ধা, বিশখালি, হলতা, গাবখান ও বাসন্ডাসহ সব নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার মধ্যে কাঁঠালিয়া উপজেলা নিম্নাঞ্চল হওয়ায় একটু পানি উঠলেই উপজেলা পরিষদ তলিয়ে যায়। বন্যাসহ সব দুর্যোগ থেকে কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ রক্ষার জন্য আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এর কাজ আগামী শুকনো মৌসুমে শুরু করা হবে।
এছাড়াও কাঁঠালিয়া উপজেলার নিম্নাংশের বেড়িবাঁধ, রাজাপুর, নলছিটি ও ঝালকাঠি সদর উপজেলার যেখানে বেড়িবাঁধ নেই সেখানে নতুন করে বাঁধ তৈরি ও অরক্ষিত বেড়িবাঁধের নির্মাণ প্রকল্প শিগগিরই শুরু হবে।