সুমন-ফরিদ দুই ভাই এক সঙ্গে চলাচল করতো। এলাকার কারো সঙ্গে কোনো দিন দু’ কথা হয়নি। দুই ভাইকে এক সঙ্গে খৎনা করা হয়, বিয়েও হয় এক সঙ্গে। চলেও গেলেন এক সঙ্গে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাপাহাড় এলাকায় কাভার্ডভ্যানচাপায় এর বুধবার রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান চারজন। এদের মধ্যে শামসুদ্দীনের ছেলে মো. সুমন ও শেখ ফরিদও রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার সদর ইউপির গড়িয়াইশ গ্রামে জানাজা শেষে তাদের দাফন করা হয়েছে।
দুই ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বৃদ্ধ শামসুদ্দীন। তার আহাজারিতে আকাশ-বাসাত ভারি হয়ে উঠছে। দুই ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নুরজাহান।
নিহতদের বাবা শামসুদ্দীন বলেন, এভাবে বুক খালি করে দুই ছেলে চলে যাবে কখনো চিন্তাও করতে পারিনি। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো। ছোট ছোট নাতি-নাতিনদের কী হবে?
জানা যায়, সুমন-ফরিদ এক সঙ্গে চলাচল করতো। এলাকার কারো সঙ্গে কোনো দিন দু’ কথা হয়নি। দুই ভাইকে এক সঙ্গে খৎনা করা হয়, বিয়েও হয় এক সঙ্গে। গতকাল এক সঙ্গে তারা মারাও যায়। রাহিম নামের চার বছরের এক ছেলে ও তাসফিয়া নামে এক মেয়ে রয়েছে শেখ ফরিদের। অপরদিকে নিশাদ নামে ৭ বছরের এক ছেলে ও ৪ বছরের মারিয়া নামে একটি মেয়ে রয়েছে সুমনের।
বুধবার রাত ১১ টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের সোনা পাহাড় ফিলিং স্টেশন থেকে বের হওয়ার পর একটি লরিকে চট্টগ্রামগামী জোনাকি পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। খবর পেয়ে সেখানে দায়িত্বরত হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। সঙ্গে এলাকার লোকজন ও স্থানীয় সিএনজি চালকরাও ছিলেন।
এ সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি কাভার্ডভ্যান দাঁড়িয়ে থাকা সবাইকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে চারজন মারা যায়। আহতদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল এএসআই মোস্তফার অবস্থা আশংকাজনক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।